মা বেঁচে আছেন কি না, জানেন না সু চির ছেলে

কিম বলেন, ‘তার (সু চির) নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে তাকে কেউ দেখেনি। তার আইনজীবীদের সঙ্গে তো নয়ই,যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।’ 

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৩ এএম

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মন্তব্য করেছেন তার ছেলে কিম অ্যারিস।  ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি যতদূর জানি তিনি হয়তো আর নেই।” 

অনেকদিন ধরে সু চির কোনো খোঁজ মিলছে না। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর তাকে বন্দি করে জান্তা বাহিনী। প্রথমে কিছুদিন তার খবর মিললেও বিগত বছরগুলোতে সু চির কোনো বক্তব্য বা অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর গুঞ্জনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

কিম অ্যারিস  বলেছেন, ‘তার(সু চির)  নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে তাকে কেউ দেখেননি। তার আইনজীবী দলের সঙ্গে তো নয়ই,যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।’ মাঝেমধ্যে শুধু পরোক্ষ সূত্রে তার হৃদ্‌যন্ত্র, হাড় এবং মাড়ির সমস্যার কথা জানা গেছে। তাও এমন এক সরকারের পক্ষ থেকে যারা সু চির সরকারকে উৎখাত করেছিল । 

কিম আরও বলেন, ‘আমার ধারণা, আমার মাকে নিয়ে মিন অং হ্লাইং (মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান) -এর নিজস্ব কোনো এজেন্ডা আছে। জনমতকে শান্ত করতে গোপন বন্দিশালা থেকে তিনি যদি আমার মাকে নির্বাচনের আগে বা পরে মুক্তি দেন কিংবা অন্তত গৃহবন্দীত্ব নিশ্চিত করেন, সেটাও অন্তত আশা জাগানিয়া কিছু একটা হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সাড়া পায়নি রয়টার্স। এর আগে অবশ্য সরকারি ছুটি বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো উপলক্ষে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বন্দী মুক্তি দিতে দেখা গেছে। 

আর চলতি মাসের ২৮ তারিখ থেকে কয়েক ধাপে মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সু চির ছেলে কিম আসন্ন নির্বাচনকে মায়ের মুক্তির উপলক্ষ হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিক কিম জাপান সফরে গিয়ে দেশটির বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি চাইছেন, তার মাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জাপানের মতো অন্যান্য দেশের সরকারগুলো জান্তার ওপর চাপ তৈরি করুক।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গভীর সংকটে রয়েছে মিয়ানমার। সমন্বিত ও এককভাবে জান্তার সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। জান্তার হাতছাড়া হয়ে গেছে অনেক অঞ্চল। এরই মধ্যে উসকানি, দুর্নীতি, নির্বাচনে জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন অং সান সু চি। তিনি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অবলম্বনে।