দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছোট্ট আয়শা চিৎকার করছিল, ‘আব্বু, আমাকে নাও, আমাকে নাও।’ চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখলেও কোনোভাবেই আয়শার কাছে যেতে পারেননি মা। পুড়ে যাওয়ার ঘরের পাশে বসে বিলাপ করে কেবল সেই কথাই বলছিলেন তিনি।”
এমি জান্নাত
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএমআপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
আয়েশার বাড়ির আগুন নেভাতে যখন ব্যস্ত ফায়ার সার্ভিস, আয়েশা তখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
লক্ষ্মীপুরের সেই রাতের আগুনে শুধু একটি ঘর পোড়েনি, পুড়েছে একটি পরিবারের স্বপ্ন। খালি হয়েছে মায়ের বুক। ছোট্ট আয়েশা, অন্যান্য রাতের মতো ঘুমাচ্ছিল সেদিনও। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে গেছে ছোট্ট শরীর।
১৯এ ডিসেম্বর শুক্রবার গভীর রাতে লক্ষ্মীপুরে বিএনপির স্থানীয় নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে আগুন দেওয়া হয়। সবাই ঘুমাচ্ছিলেন।
বেলালসহ দগ্ধ হয়েছেন তিনজন। কিন্তু আগুনের তেজ সহ্য করতে পারেনি আয়েশা। ঝলসে যায় তার ছোট্ট শরীর। বাঁচানো যায়নি আয়েশাকে।
১৮ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। চালানো হয় হামলা।
ঢাকায় দৈনিক প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় অফিস। পত্রিকা দুটি একদিন ছাপা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
একই সময় হামলা হয় ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি কেন্দ্রের ভবনে। পরদিন শুক্রবার রাত আটটার দিকে তোপখানা সড়কে পাঁচতলা একটি ভবনের দোতলায় উদীচীর কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
ওই দিনই মধ্যরাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায় বেলাল হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
কী ঘটেছিলো সে রাতে?
লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়াহিদ পারভেজ আলাপকে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যায় ছোট আয়েশা। যার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়, তার নাম বেলাল হোসেন। তিনি ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা। তিনিসহ তার আরও দুই মেয়ে দগ্ধ হয়। আগুনে বেলাল হোসেনের ঘরটিও পুড়ে গেছে।’’
বেলাল হেসেনের রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেলাল হোসেন ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।’’
কারা আগুন দিয়েছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, “সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। আমরা এখনো আগুন দেয়ার কারণ জানতে পারিনি। ফায়ার সার্ভিসও কাজ করছে।’’
“সে কোন কথা বলার অবস্থায় ছিল না। যে প্রশ্নই করা হয়েছে, উনি একদম চুপ ছিলেন। পরে স্থানীয়রা বলেন, ভেতরে একজন আটকা পড়ে আছে। আমরা ভেতরে গিয়ে দেখি আয়েশার পায়ের পুরো অংশ এবং মাথার পুরো অংশ পুরে গেছে। তাকে আমরা মৃত অবস্থাতেই পাই। বেলালের আরও দুই মেয়েকে আমরা পৌঁছানোর আগেই সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিলো। বেলালকে পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার হাতের এক পাশ পুড়ে গেছে। তার স্ত্রীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিলো না,” রাকিবুল হাসান বলেন।
ঘরটিতে বাইরে থেকে কোনও তালা দেওয়া ছিল কি না জানতে চাইলে বলেন, “আমরা কোনও তালা পাইনি। দরজা টিনের ছিল। যেটা পুড়ে আলাদা হয়ে গেছে।”
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে রাকিবুল বলেন, “পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা আমাদের জানান, রাতে হঠাৎ আমরা জোরে একটা শব্দ পাই। এরপরই বাইরে গিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।”
তবে কোনও বিস্ফোরকের আলামত পায়নি ফায়ার সার্ভিস।
“আমাদের কারও সাথে কোনও শত্রুতা নেই। কাউকেই সন্দেহ করি না। কেন, কারা আগুন দিলো কিছুই জানি না। আমার ছোট ছেলে কোলে ছিলো। তাকে নিয়ে আমি বের হই। আমার বড় মেয়ে স্মৃতি, মেঝ মেয়ে বিথীকে বের করতে গিয়ে নিজে পুড়ে গেছে। আয়েশাকে আমরা বের করতে পারি নাই”, রকিবুলকে বলছিলেন আয়েশার মা।
তাদের ঘরে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। তবে সেটি আগুন লাগার পরে বিস্ফোরিত হয় বলে ধারণা করছে আশেপাশের বাসিন্দারা।
কেমন আছে বেঁচে যাওয়া দুই বোন
বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বেলাল হোসেনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান আলাপকে বলেন, “গতকাল শনিবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে তাদের এখানে নিয়ে আসে স্বজনরা। বিথীর শরীরের দুই শতাংশ পুড়ে যায়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তবে স্মৃতির শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।’’
যা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়
আয়েশার মৃত্যুতে বিএনপির ফেইসবুক পেইজ এবং বিনএপি মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়,“আগুন আর ধোঁয়ার তীব্রতায় ঘুম ভেঙে যায় নাজমা বেগমের। রাত দুইটা বাজে তখন। ঘরের ভেতর আগুন জ্বলছিল। সেই আগুনে পুড়ছিল নাজমার বুকের ধন ৭ বছর বয়সী মেয়ে আয়শা আক্তার।
দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছোট্ট আয়শা চিৎকার করছিল, ‘আব্বু, আমাকে নাও, আমাকে নাও।’ চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখলেও কোনোভাবেই আয়শার কাছে যেতে পারেননি মা। পুড়ে যাওয়ার ঘরের পাশে বসে বিলাপ করে কেবল সেই কথাই বলছিলেন তিনি।”
আয়েশার এমন মৃত্যু নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেটিজেনও। কেউ জানাচ্ছেন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।
মোরশেদ আলম জুলহাস নামে একজন এসব ঘটনা সাধারণ ঘটনা হয়ে গেছে বলে দুঃখপ্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেন, “ছোট পাখি, ছোট পাখি,আয়েশা।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে শহীদ হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এটি একটি কষ্টকর মৃত্যু এবং হাদিস অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা এই ধরনের মৃত্যুতে শহীদের মর্যাদা দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আগুনে পোড়া ব্যক্তি শহীদ
-কিন্তু আপসোস কত সুন্দরে নর্মালাইজ হয়ে গেলো,
কোনো হইচই নেই তেমনটা চারদিকে। কিছুটা চোখে পডে দেখে মনে হয়,যেন ফর্মালিটী মেনটেইন করতে পারলেই বাচি।”
আরেকজন লক্ষীপুরবাসী আসিফার রহমান শাকিল ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে আগুন। আগুনে পুড়ে মারা গেলো নিষ্পাপ শিশু আয়েশা। এই বর্বরতা ও নির্মমতার শেষ কোথায়??
এই ছোট্ট বাচ্চা কেও সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিচ্ছে না
বাচ্চা টি পুড়তে পুড়তে বলেছিলো আব্বু আমাকে নাও আমাকে নাও. আহা জানোয়ার এর বাচ্চাদের বিচার এই দেশে হয়তো হবে না. একদিন আল্লাহর আদালতে হবে।”
এভাবে অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। তবে এর শেষ কোথায়?
কী দোষ ছিল আয়েশার?
দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছোট্ট আয়শা চিৎকার করছিল, ‘আব্বু, আমাকে নাও, আমাকে নাও।’ চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখলেও কোনোভাবেই আয়শার কাছে যেতে পারেননি মা। পুড়ে যাওয়ার ঘরের পাশে বসে বিলাপ করে কেবল সেই কথাই বলছিলেন তিনি।”
লক্ষ্মীপুরের সেই রাতের আগুনে শুধু একটি ঘর পোড়েনি, পুড়েছে একটি পরিবারের স্বপ্ন। খালি হয়েছে মায়ের বুক। ছোট্ট আয়েশা, অন্যান্য রাতের মতো ঘুমাচ্ছিল সেদিনও। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে গেছে ছোট্ট শরীর।
১৯এ ডিসেম্বর শুক্রবার গভীর রাতে লক্ষ্মীপুরে বিএনপির স্থানীয় নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে আগুন দেওয়া হয়। সবাই ঘুমাচ্ছিলেন।
বেলালসহ দগ্ধ হয়েছেন তিনজন। কিন্তু আগুনের তেজ সহ্য করতে পারেনি আয়েশা। ঝলসে যায় তার ছোট্ট শরীর। বাঁচানো যায়নি আয়েশাকে।
১৮ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। চালানো হয় হামলা।
ঢাকায় দৈনিক প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় অফিস। পত্রিকা দুটি একদিন ছাপা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
একই সময় হামলা হয় ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি কেন্দ্রের ভবনে। পরদিন শুক্রবার রাত আটটার দিকে তোপখানা সড়কে পাঁচতলা একটি ভবনের দোতলায় উদীচীর কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
ওই দিনই মধ্যরাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায় বেলাল হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
কী ঘটেছিলো সে রাতে?
লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়াহিদ পারভেজ আলাপকে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যায় ছোট আয়েশা। যার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়, তার নাম বেলাল হোসেন। তিনি ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা। তিনিসহ তার আরও দুই মেয়ে দগ্ধ হয়। আগুনে বেলাল হোসেনের ঘরটিও পুড়ে গেছে।’’
বেলাল হেসেনের রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেলাল হোসেন ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।’’
কারা আগুন দিয়েছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, “সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। আমরা এখনো আগুন দেয়ার কারণ জানতে পারিনি। ফায়ার সার্ভিসও কাজ করছে।’’
লক্ষীপুরের কমলনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাকিবুল হাসান আলাপকে বলেন, “আমরা আগুনের খবর পাই, রাত ১২টা ৫০ মিনিটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছাই রাত ১:১৫ মিনিটে। গিয়েই দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। অনেক বড় আগুন, ঘর পুড়তেছে।”
নির্বাক বাবা
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বলছিলেন,তারা গিয়ে দেখেন বেলাল হোসেন বসে আছেন।
“সে কোন কথা বলার অবস্থায় ছিল না। যে প্রশ্নই করা হয়েছে, উনি একদম চুপ ছিলেন। পরে স্থানীয়রা বলেন, ভেতরে একজন আটকা পড়ে আছে। আমরা ভেতরে গিয়ে দেখি আয়েশার পায়ের পুরো অংশ এবং মাথার পুরো অংশ পুরে গেছে। তাকে আমরা মৃত অবস্থাতেই পাই। বেলালের আরও দুই মেয়েকে আমরা পৌঁছানোর আগেই সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিলো। বেলালকে পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার হাতের এক পাশ পুড়ে গেছে। তার স্ত্রীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিলো না,” রাকিবুল হাসান বলেন।
ঘরটিতে বাইরে থেকে কোনও তালা দেওয়া ছিল কি না জানতে চাইলে বলেন, “আমরা কোনও তালা পাইনি। দরজা টিনের ছিল। যেটা পুড়ে আলাদা হয়ে গেছে।”
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে রাকিবুল বলেন, “পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা আমাদের জানান, রাতে হঠাৎ আমরা জোরে একটা শব্দ পাই। এরপরই বাইরে গিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।”
তবে কোনও বিস্ফোরকের আলামত পায়নি ফায়ার সার্ভিস।
“আমাদের কারও সাথে কোনও শত্রুতা নেই। কাউকেই সন্দেহ করি না। কেন, কারা আগুন দিলো কিছুই জানি না। আমার ছোট ছেলে কোলে ছিলো। তাকে নিয়ে আমি বের হই। আমার বড় মেয়ে স্মৃতি, মেঝ মেয়ে বিথীকে বের করতে গিয়ে নিজে পুড়ে গেছে। আয়েশাকে আমরা বের করতে পারি নাই”, রকিবুলকে বলছিলেন আয়েশার মা।
তাদের ঘরে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। তবে সেটি আগুন লাগার পরে বিস্ফোরিত হয় বলে ধারণা করছে আশেপাশের বাসিন্দারা।
কেমন আছে বেঁচে যাওয়া দুই বোন
বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বেলাল হোসেনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান আলাপকে বলেন, “গতকাল শনিবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে তাদের এখানে নিয়ে আসে স্বজনরা। বিথীর শরীরের দুই শতাংশ পুড়ে যায়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তবে স্মৃতির শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।’’
যা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়
আয়েশার মৃত্যুতে বিএনপির ফেইসবুক পেইজ এবং বিনএপি মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়,“আগুন আর ধোঁয়ার তীব্রতায় ঘুম ভেঙে যায় নাজমা বেগমের। রাত দুইটা বাজে তখন। ঘরের ভেতর আগুন জ্বলছিল। সেই আগুনে পুড়ছিল নাজমার বুকের ধন ৭ বছর বয়সী মেয়ে আয়শা আক্তার।
দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছোট্ট আয়শা চিৎকার করছিল, ‘আব্বু, আমাকে নাও, আমাকে নাও।’ চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখলেও কোনোভাবেই আয়শার কাছে যেতে পারেননি মা। পুড়ে যাওয়ার ঘরের পাশে বসে বিলাপ করে কেবল সেই কথাই বলছিলেন তিনি।”
আয়েশার এমন মৃত্যু নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেটিজেনও। কেউ জানাচ্ছেন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ।
মোরশেদ আলম জুলহাস নামে একজন এসব ঘটনা সাধারণ ঘটনা হয়ে গেছে বলে দুঃখপ্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেন, “ছোট পাখি, ছোট পাখি,আয়েশা।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে শহীদ হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এটি একটি কষ্টকর মৃত্যু এবং হাদিস অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা এই ধরনের মৃত্যুতে শহীদের মর্যাদা দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আগুনে পোড়া ব্যক্তি শহীদ
-কিন্তু আপসোস কত সুন্দরে নর্মালাইজ হয়ে গেলো,
কোনো হইচই নেই তেমনটা চারদিকে। কিছুটা চোখে পডে দেখে মনে হয়,যেন ফর্মালিটী মেনটেইন করতে পারলেই বাচি।”
আরেকজন লক্ষীপুরবাসী আসিফার রহমান শাকিল ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে আগুন। আগুনে পুড়ে মারা গেলো নিষ্পাপ শিশু আয়েশা। এই বর্বরতা ও নির্মমতার শেষ কোথায়??
এই ছোট্ট বাচ্চা কেও সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিচ্ছে না
বাচ্চা টি পুড়তে পুড়তে বলেছিলো আব্বু আমাকে নাও আমাকে নাও. আহা জানোয়ার এর বাচ্চাদের বিচার এই দেশে হয়তো হবে না. একদিন আল্লাহর আদালতে হবে।”
এভাবে অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। তবে এর শেষ কোথায়?