অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের মতে, “এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে সম্পর্ককে ‘নরমালাইজ’ করার বড় উদ্যোগ দেখা যাবে না।” সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “এমনিতেই টানাপোড়েন আছে। তার মধ্যে নতুন করে টানাপোড়েনেকে ঘণীভূত করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।”
নাহিদ হোসেন
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০১ পিএমআপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের হাল রাজনীতির চেনা মুখ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার মূল সন্দেহভাজন ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন আছে। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে একাধিক গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বলছে এ বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই তাদের কাছে।
এই ঘটনা কেন্দ্র করেই যেন নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। পাঁচই অগাস্টের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে তা অস্বীকার করছে না কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। চুক্তি বাতিল, পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক বার্তা, বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য, সীমান্ত ও দূতাবাসকেন্দ্রিক ঘটনায় উত্তেজনা বেড়েছে।
গত ১২ই ডিসেম্বর শুক্রবার ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনার মূল সন্দেহভাজন হিসাবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একাধিক গণমাধ্যমও খবরটি প্রকাশ করে।
রাজনৈতিক মন্তব্যের জের
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেওয়া ইস্যুতে ভারতের প্রতি বরাবরই নারাজ বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনৈতিক মহল। সোমবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীসহ ভারতবিরোধী শক্তিগুলোকে আশ্রয় দিতে পারে।”
বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের একাধিক রাজনৈতিক মুখ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য যাকে 'সেভেন সিস্টার্স' বলা হয় তা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার মন্তব্যও করেছেন।
অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবিতে বুধবার ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘জুলাই ঐক্য’ নামের একটি সংগঠন। পুলিশের বাধায় আন্দোলনকারীরা ভারতীয় হাইকমিশন পর্যন্ত যেতে পারেনি।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরেই বন্ধ করে দেয়া যমুনা ফিউচার পার্কে থাকা ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র। নিজেদের ওয়েবসাইটে আইভ্যাক জানায়, নিরাপত্তা শঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
পাল্টাপাল্টি তলব
বুধবার সকালে নিজেদের বক্তব্য জানাতে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে একটি বিবৃতিও দেয় তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগ জানাতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। ‘কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠীর’ কর্মকাণ্ড ও ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনার ঘোষণার বিষয়ে এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
এর আগে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার দুই দিন পর ১৪ই ডিসেম্বর ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিল্লিতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবরত মন্তব্য কেন্দ্র করে সেই তলব হলেও, বৈঠকে শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সন্দেহভাজন পালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে।
এ বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চায় ঢাকা। কেউ ভারতে প্রবেশ করলে তাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে ভারত সরকার।
জবাবে সেদিন ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে—এমন প্রত্যাশা ভারতের রয়েছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত।
এরপর বিবৃতিও দেয় ভারত সরকার। এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, “বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। ভারত ২০২৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস নোটে উত্থাপিত দাবিগুলো স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।”
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা হয় ২০২৪ সালের দোসরা ডিসেম্বর। ওই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়ে বলে, “কূটনৈতিক ও কনস্যুলার স্থাপনাকে কোনও অবস্থাতেই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি ও সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
১৭ই ডিসেম্বর দেওয়া বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছে, কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন ভারতীয় মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্টের পর চলতি বছরের ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের হাইকমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে মোট ৫ বার তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শেখ হাসিনার বক্তব্যে ঢাকার অস্বস্তি
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। তখন থেকে তিনি ভারতেই আছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ১৭ই নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে বাংলাদেশ একাধিকবার ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে ভারত এখনো সাড়া দেয়নি।
এছাড়া, শেখ হাসিনাকে অনবরত উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় ভারত সরকারের প্রতি গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে বলেছে, পলাতক শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে তার সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ভারতের কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
তবে ভারত বারবারই বলেছে, শেখ হাসিনা তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কথা বলছেন। এ নিয়ে ভারত সরকারের কিছু করণীয় নেই, কারণ দিল্লি তাকে যোগাযোগের জন্য কোনও সুবিধা দিচ্ছে না।
হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, “প্রথমেই প্রশ্ন হচ্ছে হাসনাত কি সরকারের অংশ? সে তো সরকারের অংশ না। সরকারের বক্তব্য যদি হতো তাহলে আমি বলতাম বা সরকারের যেই সর্বোচ্চ অফিস সেখান থেকে বলতো। এটা অনেকটাই অবান্তর।”
পাল্টাপাল্টি তলব নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্য, “আমরা তাদের হাইকমিশনারকে ডেকেছি। আমরা যা কিছু বলেছি তারা তা গ্রহণ করে নাই, কিছু দ্বিমত আছে এ বিষয়ে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত না, সাধারণত এটা ঘটে।”
সম্পর্ক কি আরো শীতল হচ্ছে?
চলমান ঘটনাপ্রবাহ আর এর প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের ভবিষ্যত সম্পর্কে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “টানাপোড়েনের একটা বাতাবরণতো আছে। এই ধরনের বাতাবরণ থাকলে, এই ধরনের ঘটনাপ্রবাহ যদি চলমান থাকে এইগুলোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার একটি সুযোগতো থাকেই।”
“এতে করে টেনশন বাড়ছে বলবো না, কিন্তু এগুলো নিয়ে পাল্টাপাল্টি চলতে থাকবে। আর চললেতো খুব সঙ্গত কারণে সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আলাপ আলোচনার সুযোগ অন্তত কমে যায়। এগুলো না হলে ভালো হতো, কিন্তু হচ্ছে”, বলছিলেন এম হুমায়ুন কবির।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলছেন, “দুই দেশের সম্পর্কের যে টানাপোড়েন তা বাংলাদেশের সৃষ্টি করা নয়।”
অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের মতে, “৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক যোগাযোগের যে বিশাল ঘাটতি আছে সেটা বারবার কূটনৈতিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।”
কথায় দরকার সতর্কতা
বাংলাদেশ-ভারতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে একে অপরের সম্পর্কে নানা মন্তব্যও দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে বলেও মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “কিছু বিষয় আছে যে বিষয়গুলো দুই পক্ষে কাছেই স্পর্শকাতর। সেই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে, যাদের বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ আছে তাদের সেই বিষয়গুলোর সম্পর্কে একটু বেশি সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন।”
অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলছেন, “ভারতের অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গণমাধ্যম যেভাবে অবাস্তব ন্যারেটিভ তৈরি করে, বাংলাদেশের দায়িত্বশীলরা সেই একই কাজ করলে তা বাংলাদেশের ‘ডিপ্লোমেটিক অ্যাডভান্টেজ’ ক্ষুণ্ণ করে।”
তার মতে, “নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়াকে কেন্দ্র করে যে ধরনের ন্যারেটিভ দুই দেশেই দেখা যায় তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এই রাজনৈতিক বক্তব্যগুলো শুধু টেনশনই তৈরি করছে না, মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কাম্য নয়।”
রাজনৈতিক সরকারেই সমাধান?
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না এলে হাল সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখছেন না অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। তিনি বলছিলেন, “এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে সম্পর্ককে ‘নরমালাইজ’ করার বড় উদ্যোগ দেখা যাবে না।”
তবে ভারতের বর্তমান অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, বাংলাদেশের দিক থেকেই কিছুটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত আছে বলেও মনে করেন অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। তিনি বলছিলেন, “দুই দেশেরই উচিত হবে অবাস্তব ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে এসে পিপল টু পিপল কন্টাক্ট বাণিজ্য বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দেয়া “
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবিরের মতে, “এমনিতেই টানাপোড়েন আছে। তার মধ্যে নতুন করে টানাপোড়েনেকে ঘণীভূত করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সামনে নিজেদেরই অনেক কাজ আছে। নির্বাচন আছে। এটাকে সম্পূর্ণ করার জন্য অভ্যন্তরীণভাবে যেমন সহযোগিতা প্রয়োজন তেমনি অন্যান্য সহযোগী যারা আছেন তাদেরও এক ধরনের সহযোগিতা আমাদের জন্য ইতিবাচক।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের সাথে তার ভারতের কাউন্টারপার্ট অজিত দোভালের পরপর দুদফা বৈঠকের পর অনেকেই আশা করেছিলেন -ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের বরফ হয়তো গলতে শুরু করেছে।
কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ কি সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে? প্রশ্ন থেকেই যায়।
এই শীতে কি আরও শীতল হবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক
অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের মতে, “এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে সম্পর্ককে ‘নরমালাইজ’ করার বড় উদ্যোগ দেখা যাবে না।” সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “এমনিতেই টানাপোড়েন আছে। তার মধ্যে নতুন করে টানাপোড়েনেকে ঘণীভূত করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।”
বাংলাদেশের হাল রাজনীতির চেনা মুখ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার মূল সন্দেহভাজন ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন আছে। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে একাধিক গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বলছে এ বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই তাদের কাছে।
এই ঘটনা কেন্দ্র করেই যেন নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। পাঁচই অগাস্টের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে তা অস্বীকার করছে না কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। চুক্তি বাতিল, পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক বার্তা, বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য, সীমান্ত ও দূতাবাসকেন্দ্রিক ঘটনায় উত্তেজনা বেড়েছে।
গত ১২ই ডিসেম্বর শুক্রবার ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনার মূল সন্দেহভাজন হিসাবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একাধিক গণমাধ্যমও খবরটি প্রকাশ করে।
রাজনৈতিক মন্তব্যের জের
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেওয়া ইস্যুতে ভারতের প্রতি বরাবরই নারাজ বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনৈতিক মহল। সোমবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীসহ ভারতবিরোধী শক্তিগুলোকে আশ্রয় দিতে পারে।”
বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের একাধিক রাজনৈতিক মুখ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য যাকে 'সেভেন সিস্টার্স' বলা হয় তা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার মন্তব্যও করেছেন।
অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবিতে বুধবার ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘জুলাই ঐক্য’ নামের একটি সংগঠন। পুলিশের বাধায় আন্দোলনকারীরা ভারতীয় হাইকমিশন পর্যন্ত যেতে পারেনি।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরেই বন্ধ করে দেয়া যমুনা ফিউচার পার্কে থাকা ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র। নিজেদের ওয়েবসাইটে আইভ্যাক জানায়, নিরাপত্তা শঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
পাল্টাপাল্টি তলব
বুধবার সকালে নিজেদের বক্তব্য জানাতে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে একটি বিবৃতিও দেয় তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগ জানাতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। ‘কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠীর’ কর্মকাণ্ড ও ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনার ঘোষণার বিষয়ে এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
এর আগে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার দুই দিন পর ১৪ই ডিসেম্বর ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিল্লিতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবরত মন্তব্য কেন্দ্র করে সেই তলব হলেও, বৈঠকে শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সন্দেহভাজন পালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে।
এ বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চায় ঢাকা। কেউ ভারতে প্রবেশ করলে তাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে ভারত সরকার।
জবাবে সেদিন ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে—এমন প্রত্যাশা ভারতের রয়েছে। এ বিষয়ে সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত।
এরপর বিবৃতিও দেয় ভারত সরকার। এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, “বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। ভারত ২০২৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস নোটে উত্থাপিত দাবিগুলো স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।”
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা হয় ২০২৪ সালের দোসরা ডিসেম্বর। ওই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়ে বলে, “কূটনৈতিক ও কনস্যুলার স্থাপনাকে কোনও অবস্থাতেই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি ও সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
১৭ই ডিসেম্বর দেওয়া বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছে, কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন ভারতীয় মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্টের পর চলতি বছরের ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের হাইকমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে মোট ৫ বার তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শেখ হাসিনার বক্তব্যে ঢাকার অস্বস্তি
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। তখন থেকে তিনি ভারতেই আছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ১৭ই নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে বাংলাদেশ একাধিকবার ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে ভারত এখনো সাড়া দেয়নি।
এছাড়া, শেখ হাসিনাকে অনবরত উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় ভারত সরকারের প্রতি গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে বলেছে, পলাতক শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে তার সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ভারতের কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
তবে ভারত বারবারই বলেছে, শেখ হাসিনা তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কথা বলছেন। এ নিয়ে ভারত সরকারের কিছু করণীয় নেই, কারণ দিল্লি তাকে যোগাযোগের জন্য কোনও সুবিধা দিচ্ছে না।
যা বলছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বুধবার বিকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, “ভারতের সাথে টানাপোড়েনটা রয়েই গেল।”
হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, “প্রথমেই প্রশ্ন হচ্ছে হাসনাত কি সরকারের অংশ? সে তো সরকারের অংশ না। সরকারের বক্তব্য যদি হতো তাহলে আমি বলতাম বা সরকারের যেই সর্বোচ্চ অফিস সেখান থেকে বলতো। এটা অনেকটাই অবান্তর।”
পাল্টাপাল্টি তলব নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্য, “আমরা তাদের হাইকমিশনারকে ডেকেছি। আমরা যা কিছু বলেছি তারা তা গ্রহণ করে নাই, কিছু দ্বিমত আছে এ বিষয়ে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত না, সাধারণত এটা ঘটে।”
সম্পর্ক কি আরো শীতল হচ্ছে?
চলমান ঘটনাপ্রবাহ আর এর প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের ভবিষ্যত সম্পর্কে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “টানাপোড়েনের একটা বাতাবরণতো আছে। এই ধরনের বাতাবরণ থাকলে, এই ধরনের ঘটনাপ্রবাহ যদি চলমান থাকে এইগুলোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার একটি সুযোগতো থাকেই।”
“এতে করে টেনশন বাড়ছে বলবো না, কিন্তু এগুলো নিয়ে পাল্টাপাল্টি চলতে থাকবে। আর চললেতো খুব সঙ্গত কারণে সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আলাপ আলোচনার সুযোগ অন্তত কমে যায়। এগুলো না হলে ভালো হতো, কিন্তু হচ্ছে”, বলছিলেন এম হুমায়ুন কবির।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলছেন, “দুই দেশের সম্পর্কের যে টানাপোড়েন তা বাংলাদেশের সৃষ্টি করা নয়।”
অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের মতে, “৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক যোগাযোগের যে বিশাল ঘাটতি আছে সেটা বারবার কূটনৈতিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।”
কথায় দরকার সতর্কতা
বাংলাদেশ-ভারতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে একে অপরের সম্পর্কে নানা মন্তব্যও দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে বলেও মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
এম হুমায়ুন কবির বলছেন, “কিছু বিষয় আছে যে বিষয়গুলো দুই পক্ষে কাছেই স্পর্শকাতর। সেই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে, যাদের বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ আছে তাদের সেই বিষয়গুলোর সম্পর্কে একটু বেশি সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন।”
অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলছেন, “ভারতের অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গণমাধ্যম যেভাবে অবাস্তব ন্যারেটিভ তৈরি করে, বাংলাদেশের দায়িত্বশীলরা সেই একই কাজ করলে তা বাংলাদেশের ‘ডিপ্লোমেটিক অ্যাডভান্টেজ’ ক্ষুণ্ণ করে।”
তার মতে, “নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়াকে কেন্দ্র করে যে ধরনের ন্যারেটিভ দুই দেশেই দেখা যায় তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এই রাজনৈতিক বক্তব্যগুলো শুধু টেনশনই তৈরি করছে না, মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কাম্য নয়।”
রাজনৈতিক সরকারেই সমাধান?
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না এলে হাল সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখছেন না অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। তিনি বলছিলেন, “এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে সম্পর্ককে ‘নরমালাইজ’ করার বড় উদ্যোগ দেখা যাবে না।”
তবে ভারতের বর্তমান অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, বাংলাদেশের দিক থেকেই কিছুটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত আছে বলেও মনে করেন অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। তিনি বলছিলেন, “দুই দেশেরই উচিত হবে অবাস্তব ন্যারেটিভ থেকে বেরিয়ে এসে পিপল টু পিপল কন্টাক্ট বাণিজ্য বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দেয়া “
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবিরের মতে, “এমনিতেই টানাপোড়েন আছে। তার মধ্যে নতুন করে টানাপোড়েনেকে ঘণীভূত করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সামনে নিজেদেরই অনেক কাজ আছে। নির্বাচন আছে। এটাকে সম্পূর্ণ করার জন্য অভ্যন্তরীণভাবে যেমন সহযোগিতা প্রয়োজন তেমনি অন্যান্য সহযোগী যারা আছেন তাদেরও এক ধরনের সহযোগিতা আমাদের জন্য ইতিবাচক।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের সাথে তার ভারতের কাউন্টারপার্ট অজিত দোভালের পরপর দুদফা বৈঠকের পর অনেকেই আশা করেছিলেন -ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের বরফ হয়তো গলতে শুরু করেছে।
কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ কি সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে? প্রশ্ন থেকেই যায়।